চেতনার চৈতন্য!
আমার এক নিকট আত্মীয়ের যখন শশ্মানে ঘিয়ে মাখানো দেহটি যখন কাঠের আগুনে পুড়ে ছাই হচ্ছিল তখন ভাবছিলাম সে ঐ শরীরে নেই, কারন তার চোখের সামনে এতো কিছু হচ্ছে আর সে কিছু বলছে না।তার একান্ত প্রিয় ছেলেরা কাঁদছে আর তাদেরকে কিছুই বলছে না কিম্বা বাপন কখন এলি এটিও জিজ্ঞাসা করছে না। যার সাথে কয়েকদিন আগেও কথা বলে এসেছি কিছুতেই বিশ্বাস হতে চাইছিলো না ।তাহলে চোখের সামনে যা ঘটছে তাও অবিশ্বাস হচ্ছিলো না।তাহলে সে দেহ রেখে গেলো কোথায়?চেতনা লোপ পেলো !তাহলে সেই চেতনা কী?
একটা চিরন্তন প্রশ্ন ।এই প্রশ্নের পিছু ধাওয়া করে বিজ্ঞান আমাদের অনেক কিছুই দেখিয়েছে এবং হয়তো বা সেদিন খুব বেশি দূরেও নেই যেদিন সকালের কাগজে দেখতে পাবো "জীবনের রহস্যের পর্দা ফাঁস"।
কিন্তু জৈবিক শরীর কী আমাদের "চেতনা"র কারন?এই চেতনা আমাদের মাথার কোথায় তৈরি হয়?মানুষের জটিল মাথার
কাণ্ডকারখানা আমাদের সেই মাথা দ্বারা কী বোঝা সম্ভব?কিন্তু তা বলে কী অনুসন্ধান বন্ধ করা যায়?
না মোটেও না, কিছু অবুঝ অতৃপ্ত লোক আছেন যারা এরকম প্রশ্নের পেছনে ছুটছেন।এরকম একজন হলেন 'এডওয়ার্ড উইটেন' যিনি প্রিন্সটনের Institute for Advanced Study এর একজন পদার্থবিদ যার কাছে চেতনার থেকে মহা বিস্ফরন বোঝা সহজ ।কিন্তু কী এই চেতনা বা " Consciousness " এইযে আমিত্ব ,আমাদের চিন্ত ভাবনা ,মহাবিশ্বের
সাথে সংযোগ ,আমাাদের অস্তিত্ব সবকিছুই চেতনা ।কিন্তুঐ সেই চেতনা কী মৃত্যুর পরেও থাকে ।মৃত্যুর পরে কিছুক্ষণ তো থাকেই তেমনই বলছেন। ডঃ সাম পারনিয়ার কথায় হৃপিন্ড বন্ধ হয়ে যাবার পরে মাথায় রক্তের যোগান কমে যায় এবং মাথার দ্বারা সংঘটিত স্বাাভাবিক রিফ্লেক্স যেমন চোখের পাতা নড়া ইত্যাদি বন্ধ হয়ে যায় কিন্তূূ সেই মৃত ব্যক্তি তার চারপাশে ঘটে চলা বিষয়গুলি যেমন তাঁঁর মৃত্যু
ঘোষণা ইত্যাদি, সম্বন্ধে অবগত হয় কিন্তু ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না।তাহলে চেতনা কী মাথার ক্যেমিক্যাল লোচা? কিন্তু সেই মাথা তো অন্যনো মহাজাগতিক বস্তুর ন্যয় সেই ইলেকট্রন
প্রটোন দ্বারা গঠিত।তাহলে এই মাথা চেতনার মতন গুরুত্বপূর্ণ status পেলো কী করে? তাহলে কী এই মহাবিশ্ব
চেয়েছে বলেই আমাদেের মাধ্যমে মহাবিশ্ব চিন্তা করে?কিন্তু কেনো মহাবিশ্ব মানুষকেই বাছলো ?তবে মহাবিশ্ব চেতনা ছাড়া, অথবা চেতনা মহাবিশ্ব ছাড়া হতে পাড়ে কী?কিম্বা মহাবিশ্বের কোন কারনের জন্য মানুষের মাথা এতোটা অভিযোজিত হলো?তার পেছনে কী কোনো কারন আছে নাকি শুধুমাত্র কাকতালীয় দুর্ঘটনা?
স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দ্রেই লিন্দের কথানুসারে চেতনা দেশকাল সীমার বাইরে।যেখানে কোনোরকম ইলেকট্রন প্রোটন ছাড়াই চেতনা থাকতে পারে ।যেটি মহাকর্ষীয় তরঙ্গের
ন্যায় দেশ-কালে একটি আলোড়ন।যেখানে মহাবিশ্ব ও চেতনা পরশ্পরের সংযোগপূর্ন।একজন ছাড়া অন্যজনকে বোঝা অসম্বভ।মতানুসারে চেতনাহীন ইউনিভার্স
দীপক চোপড়া ও মেনাস কাফাটোস এর মতানুসারে ফুস করে ধোঁয়ায় মিলিয়ে যাবে।তাদের আরো মত আমরাই মহাবিশ্ব যেটির অস্তিত্ব শুধুমাত্র আমাদের কাছেই আছে ঠিক স্বপ্ন এর মতন এবং মহাবিশ্ব নিজেই সচেতন ।এবং সে মানুষ এর মধ্যে দিয়ে চিন্ত করে।এই চেতনার কথাই কী রামকৃষ্ণ পরমহংস
বলেছিলেন "তোদের চৈতন্য হোক" কথার মধ্য দিয়ে।
তাহলে তো আমাদের চেতনার মৃত্যু নেই।আমরা হলাম এক একটা রোবটের মতন আমরা চিন্তা করবো ভালো হলে মহাবিশ্ব সেই আইডিয়া গুলিকে রান করাবে।
এই পৃথিবী টা ও কম রহস্য পূর্ণ নয়! কী এমন জেনেটিক দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে এই কোটি কোটি গ্রহের মধ্যে পাথুরে নীল গ্রহের একশ কোটি জীবের মধ্যে
মানুষের মধ্যে চেতনার জন্ম নিলো।যেই চেতনা দিয়ে চেতনাকে বুঝতে চেষ্টা করছি।অদ্ভুত না বড়ই অদ্ভূত!
এই যে চারপাশে ঘটে চলা এতো কিছু সত্যিই অস্তিত্ব আছে নাকি সবই মায়া বা ভাঁওতা ?কারন আমাদেের মৃত্যুর পরে যদি আমাদের চেতনাই না থাকে তবে এই মহাবিশ্বের অস্তিত্ব আমাদের কাছে অপ্রাাসঙ্গিক।তবে?তবে তো সেই আবার বিখ্যাত হলিউডের মুভি "ম্যাট্রিক্স " এর মতন "সিমুলেসন থিয়োরি"
র কথা না বললেই নয়।কী এই "সিমুলেসন -এই আমাদের বাস্তব জগৎ আমাদের চেতনা আসলে সবকিছুই কম্পিউটার গেমের মতন সিমুলেসন করা সেগুলো এতোটাই উন্নতো যা আমরা বাস্তব ভাবি।
সে যাই হোক মানব সভ্যতা এরকম প্রযুক্তি অদূর ভবিষ্যতে তৈরি করুক বা না করুক কিম্বা Artificial intelligence
দিয়ে কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত "সোফিয়া" চেতনা হোক বা না হোক কিন্ত আমেরিকান পদার্থবিদ
জন আর্চিবাল্ড হইলার প্রশ্ন টা বড়ই প্রাসঙ্গিক যখন এই মানুষের সমস্ত চ্যালেঞ্জ পুরন হবে যখন আমাদের জানার বাইরে কিছুই থাকবে না,তখন চেতনা কী করবে?তখন কী নতুন মানব বিশ্ব গঠিত হবে?
ধন্যবাদান্তে
https://dailygalaxy.com/2019/09/the-ultimate-mystery-consciousness-may-exist-in-the-absence-of-matter-weekend-feature/amp/
https://pixbay.com