Featured Post

পরিত্যাক্ত শহর হাওড়া

  তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পরে অনেক কিছুর বদল হয়েছে। এখন পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘরে না বরং সূর্য সহ অন্য সকল গ্রহকে কৃত্রিম ভাবে পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরানো হচ্ছে।সেই সময় এর কথা মৃত নগর হাওড়া। তৃতীয় বিশযুদ্ধের সময় চিনা বোমা বর্ষণের ভয়ে সমস্ত নগরবাসী পলায়ন করেছিলো। ডাঃ কেসি পাল এর নেতৃত্বে ওরা মোট চারজন মানে রমেশ, সুমিত ও মাধব সেই রহস্যময় তেজস্ক্রিয় উৎসের সন্ধানে এসেছে। সকাল এগারোটা ঝোঁপ ঝাড় ভর্তি গলি রাস্তা যেখানে বহুবছর কোনো লোকের পা পড়েনি। রাস্তার ধারে ভগ্নপ্রায় লতা পাতা দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে সারি সারি বাড়ি দাড়িয়ে আছে। মাঝে মাঝে কিছু বন্য পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে ওদের পায়ের শব্দ ঢাকা পড়ে গেলেও ওদের যাবার রাস্তার সামনে দিয়ে কি যেনো সর সর করে রাস্তার দুদিকে নেমে যাচ্ছে।ওদের পায়ের কম্পনে রাস্তার উপর ঘাস থেকে ছোটো ছোট পোকা উড়ছে। বাতাসে ঘেঁটু ফুলের গন্ধে ছেয়ে আছে। কিছুদিন আগে ইসরোর এক কৃত্রিম উপগ্রহ ছবিতে এই পরিত্যাক্ত মৃত নগরীর উপর এক রহস্যময় আলোর সন্ধান জানা যায়। তারপর অন্য স্যাটেলাইট এর স্পেকট্রোস্কোপি বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে জানা যায় ঐ আলোক কোনো তেজস্

পিঁপড়ের ভোজ সভার আমন্ত্রণ



                      বাপন কর

আমরা তো মানুষ এর বিয়ে, অন্নপ্রাশন, শ্রাদ্ধ, জন্মদিন, পূজো কিংবা অন্য অনুষ্ঠান ইত্যাদি উপলক্ষ্যে প্রীতিভোজ এর আমন্ত্রণ পেয়ে থাকি। আমাদের সাথেই বাস করে এরকম অনেক প্রাণীরা আমোদ প্রমোদ পালন করে কিন্তূ সে আমোদ প্রমোদ আমরা সাধারণত  ডাক পাই না কিংবা ওরা কোনো মানুষ কে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ করে না।কিন্তু আমি একবার এক পিঁপড়ের ভোজ সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম।হুম আপনারা ভাবছেন কি গাঁজাখোর এর পাল্লায় পড়েছি কিন্তু ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য।আপনারা আমার গল্পঃ টা একবার শুনলে বুঝবেন আমি কোনো গাঁজাখুরি গল্পঃ করতে আসে নি।


আমি আমার কিছু বন্ধুদের সাথে গেছি বাঁকুড়ার জঙ্গল এ ঘুড়তে। আমি জঙ্গল এর ভিতরে হাঁটতে হাঁটতে একটু আলাদা হয়ে গেছিলাম তখন একজায়গায় দেখি একটা কালো পিঁপড়ের লাইন চলেছে এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে এবং তাঁদের যাত্রাপথে এক অযাচিত বিপদ এসে উপস্থিত বর্ষার জমা জল তাঁদের যাত্রাপথ কে দু ভাগে ভাগ করে দিয়েছে। যাঁরা পিছনে ছিলো তাঁরা আর এগোতে পারছে না। বেশিরভাগ এর মুখেই সাদা সাদা ডিম মানে ওরা ওদের বাসস্থান ত্যাগ করছে। পিঁপড়েরা আগে থেকে বুঝতে পারে কখন বৃষ্টি আসবে এবং এটাও বুঝতে পারে সম্ভাব্য কতটা পরিমাণ বৃষ্টি হবে এবং তাতে যদি মনে হয় তাঁদের বাসস্থান জলের তলায় চলে যেতে পারে তাহলে তারা আগে থেকে ঠিক করে রাখা নিরাপদ বাসস্থান এর দিকে যাত্রা করে। তাই বৃষ্টি হতে পারে কিনা পিঁপড়ের এই বাসস্থান ত্যাগ এর লাইন দেখে বোঝা যায়।

এমত অবস্থায় দেখি পেছনের লাইন এর পিঁপড়েরা বিচ্ছিন্ন পথের কাছে এসে জটলা করছে এবং তাদের চলাফেরা দেখে মনে হচ্ছে তাঁরা দিশেহারা হয়ে গেছে কি করবে বুঝতে না পেরে। আর উল্টোদিকে সকলে চলে গেলেও কিছু মাতব্বর গোছের পিঁপড়েরা অসহায় এর মতন দাঁড়িয়ে আছে। এমত অবস্থায় আমার ওদের ওই অসহায় অবস্থা দেখে মায়া হলো তাই পাশের গাছ থেকে একটা পাতা ছিঁড়ে জলের উপর রেখে দিলাম । তাতে ওই জলের ওপর একটা সেতু তৈরি হলো এবং সকল পিঁপড়েরা আবার লাইন করে সারিবদ্ধ ভাবে সামনের দিকে এগোতে থাকলো। আমি আরো লক্ষ করলাম আগের সেই মাতব্বর পিঁপড়ে গুলো কিন্তু একধারে দাড়িয়ে সকলের যাত্রা নিরীক্ষণ করছিল। আমিও ওখানে বসে পিঁপড়ে গুলোর যাওয়া দেখছিলাম ধীরে ধীরে পিঁপড়ের সারি শেষ হলে লক্ষ করলাম মাতব্বর পিঁপড়ে গুলো এক সারি তে দাঁড়িয়ে একি ছন্দে উপর নিচে মাথা দোলাচ্ছে ঠিক জাপানি অভিবাদন এর কায়দায়। আমার মনে হলো ওরা আমাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে।ইচ্ছা থাকলে ভাষা বা যোগাযোগের মাধ্যম কোনো বাধা হয়ে দাঁড়ায় না । যেমন এখানে ওই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী গুলো তাদের অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে আমাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছে সেটা বোঝাতে পেরেছে। যাই হোক আমিও প্রতুত্তরে দু বার মাথা নাড়িয়ে দিলাম। চমক এর তখনি শেষ নয়।ওরা কিছুদূর সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে আবার একি কায়দায় মাথা দোলাতে লাগলো কেনো জানিনা আমার মনে হলো ওরা আমাকে ওদের সাথে যেতে বলছে। তা বাঁকুড়ার জঙ্গলে এসে অবদি কিছু পাখি ছাড়া আর তো কিছু বন্য প্রাণী দেখতে পাই নি দেখাই যাক পিঁপড়ে দের পিছু নিয়ে ওরা কোথায় যায় তা এই ভেবে উঠে দাড়ালাম এবং পিঁপড়ে গুলোর পিছু নিলাম। আমার মনে হলো এদের মধ্যে নিশ্চই পিঁপড়েদের রাজা বা নেতা স্থানীয় পিঁপড়ে হবে এবং ওরা আমার দয়ার প্রতিদানে আমাকে ওদের আস্তানা তে নিয়ে যেতে চায় হয়তো কোনো ধন্যবাদ সূচক সন্মান জানাবার উদ্দ্যেশে। আমাকে তো কোনো মানব অনুষ্ঠানে ডাকে না ওই যে পার্টি থেকে সন্মান প্রদর্শন হয় তাতেও ডাক পাই না ,নাহয় পিঁপড়েদের সন্মান নিলাম ওরাও সমাজবদ্ধ জীব এবং মানুষের থেকে বেশি শৃঙ্খল ।আমরা ভিড়ে দাড়িয়ে ঠেলাঠেলি করি , আমাদের সকলের তারা থাকে বলে কখনোই কোথাও লাইন মেইনটেইন করার লোক না থাকলে লাইন এতে দাঁড়াবার প্রয়োজন বোধ করি না। পিঁপড়েরা কিন্তু লাইন ঠিক মেইনটেইন করে । যাইহোক এসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে বেশ অনেকটা হেঁটে এসে একটা উই এর ঢিবির সামনে উপস্থিত হলাম। আমার সামনে এক বিশাল পিঁপড়ের ফৌজ দাড়িয়ে ছিলো এবং আমাকে দেখে মিলিটারি কায়দায় অভিবাদন জানালো । আমি একটা শুকনো জায়গায় বসে গেলাম ওদের কান্ড কারখানা দেখবো বলে।আমি বসতেই দেখি একপাল পিঁপড়ে একটা বড়ো শাল পাতা রেখে চলে গেলো। তারপর আরো কিছু পিঁপড়ে এসে একটা রস পূর্ণ মৌচাক রেখে গেলো ওই শালপাতার উপর। আ ওদের আতিথেয়তা তে মুগ্ধ হয়ে গেলাম, আর মৌচাক টা তুলে নিয়ে কামড় বসালাম আহা ঠিক অমৃত। এরপর আমার সামনে একদল পিঁপড়ে বিভিন্ন ছন্দে সারিবদ্ধ ভাবে নৃত্য করতে লাগলো। আমার ও ওই নৃত পরিবেশক দের মাঝে মাতব্বর পিঁপড়ে গুলো একটা শুকনো পাতার উপর বসেছিল। আর চারধারে জনগন পিঁপড়ে রা ছিল। পিঁপড়ের রাজত্বে এরকম ভাবে আতিথেয়তা পেয়ে খুব ভালো লাগলো। শেষে কিছু বাদাম রেখে গেলো। অনেক ক্ষন খাওয়া ও নাচ চলার পর দেখলাম পিঁপড়ে গুলো ওই উই এর ঢিবিতে প্রবেশ করছে, মানে বুঝলাম অনুষ্ঠান শেষ হলো। মাতব্বর পিঁপড়ে গুলো আমার সামনে এসে অভিবাদন করে চলে গেলো। আমিও উঠে পড়লাম । এই ভাবে আমার পিঁপড়ের ভোজ সভাতে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম।

Popular posts from this blog

Some Funny Mathematical Questions

Puthon3

পৃথিবীর কোনো এক আদিম সকাল